হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের তথ্য অনুযায়ী সাধারণত পুরুষ মানুষ তার স্বাস্থ্যের প্রতি মহিলাদের তুলনায় কম মনোযোগী বা কম যত্নশীল হয়ে থাকেন। এছাড়াও পুরুষের ক্ষেত্রে কয়েকটি অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস বেশি দেখা যায় এবং সেই সাথে বিশেষ কিছু জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুঁকি রয়েছে।
তবে আশার কথা হলো এই যে কিছু টিপস্ অনুসরণের মাধ্যমে পুরুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব। একজন সচেতন পুরুষ হিসেবে সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপনের নিমিত্তে আপনার জন্য কি কি অত্যাবশ্যকীয় করণীয় রয়েছে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে অনুচ্ছেদটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ করুন
বেঁচে থাকার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হলো খাবার যা আমাদের শরীরে ক্ষয় পূরণ, বৃদ্ধি সাধন এবং শক্তি সরবরাহ করে থাকে। আগেকার দিনের তুলনায় বর্তমানে আমাদের দেশে খাবারের সংকট নেই বললেই চলে তবে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণের ব্যাপারে অজ্ঞতা ও অনীহা রয়েছে অনেকের মাঝেই। বিশেষত বাইরের খাবার, ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার ইত্যাদির প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়ে গেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই সমস্ত খাবার গুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষত প্রক্রিয়াজাত খাবার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের রোগ সহ শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তাহলে কোন ধরনের খাবার নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত? এই প্রশ্নের উত্তরে এক কথায় বলা যায় যে যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ করুন। যেমনঃ ফলমূল ও শাকসবজি, আঁটার রুটি, মাছ, দুধ, ডিম ইত্যাদি। তবে কিছু কিছু প্রাকৃতিক খাবার রয়েছে যেগুলো কম খেতে হবে আবার কারো কারো ক্ষেত্রে সেগুলো বর্জন করা লাগতে পারে। যেমনঃ
- শরীরের ওজন বেড়ে যাচ্ছে অথবা ডায়াবেটিস রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য সাদা ভাত কম খেতে হবে
- রক্তে কোলেস্টেরল অথবা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে মুরগির চামড়া ও গরুর মাংস বর্জন করতে হবে
- কামরাঙ্গা একধরনের ফল তবে এটি বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না। কারণ এর মধ্যে Caramboxin নামক একটি ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে
- কোনো খাবারে এলার্জি থাকলে অথবা চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা থাকলে সেই খাবার পরিহার করতে হবে
শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন গুলো খাচ্ছেন কিনা খেয়াল করুন
ভিটামিন শরীরের জন্য সামান্য পরিমাণে প্রয়োজন হয় কিন্তু তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণ করে। শরীরের মধ্যে ভিটামিন উৎপাদন হতে পারে না বরং বিভিন্ন খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়। আবার সূর্যের আলো ত্বকে লাগানোর মাধ্যমে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় যা হাড়ের গঠন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পুরুষের যৌন সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। নিয়মিত ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ না করলে শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি জনিত লক্ষণ দেখা যায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে যা একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উত্তম।
শরীরে ভিটামিন সরবরাহ তথা বিশেষ উপকারিতা পাওয়ার জন্য নিজে নিজে ফার্মেসি থেকে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট কিনে খাওয়া কতটা যৌক্তিক? অনেকেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভিটামিন ডি অথবা চুল পড়া রোধ ও যৌন সক্ষমতা বাড়াতে প্রতিনিয়ত ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু মনে রাখবেন ভিটামিন যেমন শরীরের জন্য উপকারী তেমনি ভাবে অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। আর তাই অহেতুক ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তবে যত খুশি ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে পারেন কারণ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীরে ভিটামিন অতিরিক্ত হয়ে যায় না।
কোমরের মাপ বেড়ে যাচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন
BMI (Body mass index) বহুল প্রচলিত একটি পদ্ধতি যেখানে উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের ওজন ঠিক রয়েছে কিনা তা নির্ণয় করা হয়। BMI মান ১৮.৫ থেকে ২৫ এর মধ্যে থাকলে তা স্বাস্থ্যসম্মত হিসেবে বিবেচিত হয়। এর পাশাপাশি WHR (Waist hip ratio) নামক আরেকটি বিষয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে জনপ্রিয় হয়েছে যেখানে পেট (Waist) ও কোমরের (hip) অনুপাত দেখে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু রয়েছে তা জানা যায়। এক্ষেত্রে পেটের উপর নাভি বরাবর এবং কোমরের ক্ষেত্রে নিতম্বের (Buttocks) সবচেয়ে উঁচু অংশ ঘিরে মাপ নিতে হবে। অতঃপর পেটের পরিধিকে কোমরের পরিধি দিয়ে ভাগ করতে হবে। যদি এই মান ১ বা তার বেশি হয় অর্থাৎ পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমে থাকে তবে শরীরের এই গঠনকে মেডিকেলের ভাষায় apple-shaped body বলা হয় যা হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে নির্দেশ করে। এই সমস্যা এড়াতে চাইলে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী খাবার তথা ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে। যারা কম পরিশ্রমী অথবা বসে থেকে কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে কম ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। সেই সাথে নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং সেই সাথে হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব হয়। কতক্ষণ সময় এবং কি ধরনের ব্যায়াম করতে হবে সেই বিষয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে।
এই বিষয়ে নির্দেশনা হলো সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট অর্থাৎ প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট মাঝারি প্রকৃতির ব্যায়াম করতে হবে। যেমনঃ হাঁটাহাঁটি, সিঁড়ি বেয়ে চলাফেরা করা, সাঁতার কাটা, বাইসাইকেল চালানো ইত্যাদি। তবে যারা ভারী ব্যায়াম (High intensity exercise) যেমন ভারোত্তোলন, ট্রেডমিলে দৌড়ানো, পুশ আপ ইত্যাদি করতে ইচ্ছুক তাদের ক্ষেত্রে সপ্তাহে ৯০ মিনিট ব্যায়াম করাই যথেষ্ট। উল্লেখ্য ভারী ব্যায়ামের ক্ষেত্রে সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন বিশ্রাম নিতে হবে।
অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করুন
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের তথ্য অনুযায়ী পুরুষের ক্ষেত্রে মহিলাদের তুলনায় কয়েকটি অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস বেশি দেখা যায়। যেমনঃ (Harvard Medical School, n.d.)
- ধুমপান করা
- মদ্যপানের অভ্যাস
- মাদকদ্রব্য গ্রহণ করা ইত্যাদি
অধিকাংশ পুরুষের ক্ষেত্রেই ধুমপানের অভ্যাস দেখা যায় যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষত ধুমপানের ফলে ফুসফুসের রোগ, হার্টের সমস্যা এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেই সাথে পুরুষের যৌন অক্ষমতা (Erectile dysfunction) সৃষ্টিতেও ধুমপানের অবদান রয়েছে। আর তাই একজন সচেতন পুরুষ হিসেবে ধুমপানের অভ্যাস পরিত্যাগ করা জরুরি।
ধুমপানের মতো আরেকটি বাজে অভ্যাস হলো মদ্যপান করা যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় লিভার। বিশেষত লিভারে চর্বি জমে যাওয়া, লিভার সিরোসিস সহ প্রাণঘাতী লিভার ক্যান্সারের কারণ হতে পারে মদ্যপানের অভ্যাস। মদ্যপান ছাড়াও আমাদের দেশে ভয়ংকর কিছু মাদকদ্রব্য রয়েছে যা কম বয়স্ক ছেলেরা ঝোঁকের বশে গ্রহণ করে থাকে। এই সব মাদকদ্রব্য শরীরের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি ভাবে তা পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সৃষ্টি করে। আর তাই মদ্যপান সহ সবধরনের মাদকদ্রব্য থেকে দূরে থাকা উচিত।
নিজের ত্বকের যত্ন নিন
আমেরিকান একাডেমি অফ ডার্মাটোলজি এর তথ্য অনুযায়ী ৫০ বছরের বেশি বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে ত্বকের ক্যান্সারে (Skin cancer) আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুঁকি রয়েছে। এই ক্যান্সার প্রতিরোধে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করা জরুরি। আর তাই অতিরিক্ত রোদে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে অথবা রোদে গেলে সানস্ক্রিন (Sunscreen) ব্যবহার করা উচিত।
ত্বকে ক্যান্সার ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হতে পারে। যেমনঃ দাদ, একজিমা, ফোঁড়া, চুলকানি, হাত পা ফেটে যাওয়া, মাথায় খুশকি ইত্যাদি। ত্বকের যে কোনো সমস্যায় প্রয়োজনে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। মনে রাখবেন ত্বকের সমস্যায় কখনোই ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান অথবা অবৈজ্ঞানিক এবং কবিরাজি মলম ব্যবহার করা যাবে না। কারণ তাতে করে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
প্রস্টেট ঠিক আছে কিনা চেকাপ করান
প্রস্টেট গ্রন্থি (Prostate gland) শুধুমাত্র পুরুষের শরীরে থাকে যা তলপেটে মুত্রনালীকে ঘিরে অবস্থান করে। প্রস্টেট গ্রন্থি থেকে বীর্য উৎপাদন হয় এবং সামান্য পরিমাণে যৌন হরমোন (Testosterone) নিঃসরণ হয়ে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রস্টেট গ্রন্থি অস্বাভাবিক ভাবে বড় হয়ে যাওয়া (Benign prostatic hyperplasia) অথবা প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আপনার ক্ষেত্রে প্রস্টেট গ্রন্থির সমস্যা রয়েছে কিনা তা নিম্নলিখিত লক্ষণাবলী দেখে বুঝতে পারবেন। যেমনঃ
- ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ
- প্রস্রাবের শুরুতে অথবা প্রস্রাবের সময় ব্যথা বোধ
- প্রস্রাব শেষ করার পরেও ফোঁটায় ফোঁটায় নির্গত হয়
- লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা
- বীর্যপাতের সময় ব্যথা
- প্রস্রাব অথবা বীর্যের সাথে রক্ত
- বসে থাকার সময় তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি
উল্লেখিত সমস্যা গুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এছাড়াও প্রস্টেট গ্রন্থির রোগ প্রতিরোধের জন্য ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক পুরুষদের জন্য প্রতিবছর অন্তত একবার প্রস্টেটের অবস্থা বুঝতে কতিপয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। যেমনঃ
- DRE (digital rectal exam)
- PSA (prostate specific antigen)
- আল্ট্রাসনোগ্রাফি ইত্যাদি
প্রস্টেট গ্রন্থির সমস্যা এড়াতে লাল মাংস, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও চর্বি জাতীয় খাবার কম পরিমাণে খেতে হবে। সেই সাথে ধুমপান বর্জন, আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
Colorectal Cancer এর ঝুঁকি আছে কিনা চেকাপ করান
Colorectal cancer বলতে অন্ত্র ও মলাশয়ের ক্যান্সারকে বোঝানো হয়ে থাকে। একজন পুরুষের ক্ষেত্রে মহিলাদের তুলনায় কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুঁকি রয়েছে। আমাদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ মারা গেছেন কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। কোলন ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ের লক্ষণ সমূহ হলোঃ
- অনিয়মিত মলত্যাগ
- কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা ডায়রিয়া
- মলত্যাগের মাধ্যমে পেট খালি হয় না
- কালো রঙের পায়খানা
- ব্যথা (abdominal pain)
- রক্তস্বল্পতা (Anemia)
- দুর্বলতা ও ক্লান্তি বোধ
- ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি
উল্লেখিত লক্ষণ সমূহ দেখা দিলে অবহেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব একজন কলোরেক্টাল সার্জনের (Colorectal surgeon) শরণাপন্ন হতে হবে। কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসায় রোগী দীর্ঘদিন যাবত বেঁচে থাকতে পারে। কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় কি? এই ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ক্যান্সার ইন্সটিটিউট এর নির্দেশনা হলো ৫০ বছরের পর থেকে নিয়মিত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিশেষত কলোনস্কপি (Colonoscopy) করাতে হবে। সেই সাথে জীবন যাপন পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়। এক্ষেত্রে করণীয় বিষয়াবলী গুলো হলোঃ
- প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে
- নিয়মিত মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তুলুন
- বেশি পরিমাণে লাল মাংস খাওয়া যাবে না
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি
- অ্যাভোকাডো, বাদাম, অলিভ অয়েল ইত্যাদি খেতে হবে
- কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে
নিয়মিত একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে রেগুলার চেকাপ/এডভাইস নিন
আমাদের দেশে এখনো অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার ব্যাপারে জড়তা দেখা যায়। যে কোনো রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে বরং পরিস্থিতি যখন সহ্য সীমার বাইরে চলে যায় তখন মানুষ চিকিৎসকের কাছে যায়। আর সুস্থ অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা সেটা তো একদম বিরল ঘটনা। কিন্তু প্রত্যেকের উচিত স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া এবং রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা। এই অভ্যাস করার ফলে যেমন রোগ যন্ত্রণা কম ভোগ করতে হবে তেমনি ভাবে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। সেই সাথে সুস্থ অবস্থায় স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনো পরামর্শের জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়া যেতে পারে। যেমনঃ খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কিত সঠিক নির্দেশনা পেতে একজন পুষ্টিবিদ (Dietitian) এর শরণাপন্ন হতে হবে।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের হাত থেকে বাঁচতে নিয়মিত কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। যেমনঃ
- BMI নির্ণয় করতে হবে এবং তা অবশ্যই ১৮.৫ থেকে ২৫ এর মধ্যে থাকা উচিত
- আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন এর নির্দেশনা অনুযায়ী ৩৫ বছরের পর থেকে নূন্যতম প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা (Lipid profile) করতে হবে।
- যাদের উচ্চ রক্তচাপ (Hypertension) রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার মেপে দেখা উচিত
- রক্তে সুগারের মাত্রা দেখতে হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি
- মানসিক সমস্যা দেখা দিলে একজন সাইকিয়াট্রিস্ট এর পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে ইত্যাদি
Leave a Reply