নির্যাতনে মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগে আদালতে মামলা

নির্যাতনে মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগে আদালতে মামলা

Spread the love

মামলায় আসামি করা হয়েছে বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের কাশিপুর আল ইয়াসিন শিশুসদন হাফিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. জিকিরউল্লাহ (৪৫) ও তাঁর ছোট ভাই কাওছারকে (৪০)। এ ছাড়া তিন–চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

আরাফাত ওই মাদ্রাসার নজরানা বিভাগের ছাত্র ছিল। ৮–৯ মাস আগে মাদ্রাসায় আরাফাতকে ভর্তি করা হয়। তার মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণে ২৬ আগস্ট ‘বাউফলে শিক্ষকের নির্যাতন, পালাতে গিয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু’ ও ২৮ আগস্ট ‘নির্যাতনে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ, মামলা নেয়নি পুলিশ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

মামলার বাদী মো. হাসান প্যাদা বলেন, পড়া মুখস্থ না হওয়ায় ২২ আগস্ট বেলা দুইটার দিকে তাঁর একমাত্র ছেলে আরাফাতকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত করেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. জিকিরউল্লাহ। এতে আরাফাতের মাথার হাড় ভেঙে যায় ও ডান চোখে গুরুতর জখম হয়।

কিন্তু বিষয়টি তাঁদের না জানিয়ে জিকিরউল্লাহ তাঁর ছোট ভাই মো. কাওছারের মাধ্যমে আরাফাতকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। অবস্থা ভালো না দেখে পরের দিন সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে মুঠোফোনে কল করে আরাফাতের অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি তাঁদের জানানো হয়।

হাসান প্যাদা বলেন, তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে আরাফাতকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। অসুস্থ আরাফাতকে উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৪ আগস্ট তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

সেদিনই রাত ৯টার দিকে আরাফাত মারা যায়। ময়নাতদন্ত শেষে ২৫ আগস্ট রাত ১১টার দিকে আরাফাতের লাশ বাউফলের গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। ২৬ আগস্ট সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জিকিরউল্লাহ ও তাঁর ভাই কাওছারের নামে গতকাল শনিবার দুপুরে বাউফল থানায় মামলা করতে যান হাসান প্যাদা। তবে থানায় মামলা নেওয়া হয়নি। পরে আজ তিনি পটুয়াখালী আদালতে গিয়ে মামলাটি করেন।

মামলার বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির বাবা মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছিলেন। লিখিত অভিযোগ করেননি। এখন আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অবশ্য হাসান প্যাদার ভাষ্য, তিনি লিখিত অভিযোগ করতে থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু থানায় তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়নি। পরে অভিযোগের ফটোকপি বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি কামরুজ্জামান ওরফে বাচ্চুসহ অন্য সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করেছেন।

এদিকে ঘটনার পর থেকে জিকিরউল্লাহ মাদ্রাসায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছেন। মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।