চরহোগলপাতিয়া গ্রামের ৮০০ থেকে ৯০০ মিটার এলাকা ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে ১৫৬ মিটার এলাকায় ১৫ হাজার ২১৪ জিও ব্যাগ ফেলা হবে বলে জানা গেছে।
আজ রোববার সকালে ভাঙনকবলিত চরকালকিনি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর পাড় ঘেঁষেই কয়েক শ পরিবার বসবাস করছে। নদীর পাড় ভাঙতে থাকায় স্থানীয় লোকজন তাঁদের বাড়ির আশপাশের ছোট-বড় গাছগুলো কেটে বিক্রি করে দিচ্ছেন। অনেকেই আবার ঘরের দরজা-জানালা খুলে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন।
মণ্ডলবাড়ির সুনীতা মণ্ডল বলেন, ‘নদী য্যামনে ভাঙতাছে তাতে আমাগো পুরানো ঘরডা আর টিকব না। স্বামী-সন্তান নিয়ে কোনখানে যামু, কোনখানে ঠাঁই লমু, তাও জানি না। চিন্তায় রাইতে ঘুমাইতে পারি না।’
এদিকে আড়িয়াল খাঁ নদের বিভিন্ন অংশে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে বালু তোলায় নদীভাঙন বেড়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় লোকজন। গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বাস নামের এক বাসিন্দা বলেন, ১২ মাস নদীতে বালু তোলা হয়। দিনরাত নদীতে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তুলে প্রভাবশালী একটি চক্র তা বিক্রি করছে।

আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু তোলাসহ আরও কিছু কারণে আড়িয়াল খাঁর ভাঙন বেড়েছে। ভাঙনে এই ইউনিয়নের চরহোগলপাতিয়া ও চারকালকিনি গ্রাম দুটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সাধ্যমতো ভাঙনকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী বাঁধ ও জিও ব্যাগ ফেলার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, নদীতে ড্রেজার চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যারা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভাঙনকবলিত এলাকায় শিগগিরই সাহায্য-সহযোগিতা পৌঁছে দেওয়া হবে। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভাঙন ঠেকাতে আমরা বরাদ্দ পেয়েছি। খুবই শিগগির ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগের ডাম্পিংসহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পার্থ প্রতিম সাহা, নির্বাহী প্রকৌশলী, মাদারীপুর পাউবো
জেলা পাউবো সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত চরহোগলপাতিয়া গ্রামের ৮০০ থেকে ৯০০ মিটার এলাকা ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে ১৫৬ মিটার এলাকায় ১৫ হাজার ২১৪ জিও ব্যাগ ফেলা হবে বলে জানা গেছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড মাদারীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘চরকালকিনি ও চরহোগলপাতিয়া গ্রামের কিছু অংশ আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে আমরা বরাদ্দ পেয়েছি। খুবই শিগগির ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগের ডাম্পিংসহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’